নিসিন্দার ফুল

লেখক :সাঈদ আজাদ
প্রচ্ছদ : মাসুক হেলাল
প্রকাশনী : জনান্তিক মূল্য : ৩০০ টাকা
রিভিউ লেখক- শারমিন সুলতানা শ্যামলী
#গল্প_সূচি
.
১। ঘোড়া ও গাধার বাচ্চা
২। বাঁজা
৩। ফেরা
৪। ঘড়ি
৫। জীবনযাপন
৬। খুনী
৭। মাংস
৮। নিসিন্দার ফুল
৯। মেঘের রং কাল
১০। মশারি
১১। নিঃসঙ্গ চিল
১২। নোনা ইলিশ
১৩। কৃষ্ণা তিথির চাঁদ
১৪। নদীর ওপাড়
১৫। অথচ দুজনেই জানে
১৬। পৌনঃপুনিক
১৭। সম্পত্তি
১৮। শিং মাছ
১৯। ঝড়
.
#পাঠ_প্রতিক্রিয়া
.
দেখার জন্য মানুষের দুইটা চোখ থাকে। একটা চর্মচক্ষু আরেকটা মানস চক্ষু। খালি চোখে যা দেখি তারও বাইরে কিছু আছে। আর কিছু বোধ বা বোধের বেদনা কিংবা নির্বাসিত আনন্দ সবসময় মানুষের অলক্ষ্যে থাকে। খুব প্রিয় মানুষও তার দেখা পাই না।
গল্পকার নিপুণ হাতে সেই বোধের লেখচিত্র এঁকেছেন প্রতিটা গল্পে। গল্পগুলোর নামের মাঝে কাব্যিক ভাবে বাস্তবতার ছোঁয়া। তেমনি গল্পতেও গল্পের ঢং এ বলেছেন অন্তর্নিহিত সত্য।
আমরা যারা নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত। বাইরে বের হলে কত কিছু দেখার আছে। কিন্তু আমরা বেছে বেছে জৌলুসটুকু দেখি। বালিতে মুখগোঁজা খরগোশ আর উটপাখির এড়িয়ে যাই চরম বাস্তবতা।
এই গল্পে শিল্পপতি আছে, আছে বড় চাকরিজীবী। মাস গেলেই লাখেলাখে টাকা হাতবদল হয়। কিন্তু তারা কতটা সুখী কিংবা তাদের আসল সুখটা কোথায়?
আছে গ্রামের মানুষের কথা। গ্রামের মাতব্বর শ্রেণী কিংবা খেটে খাওয়া মানুষের কথাও আছে। একই সাথে বসবাসে আনন্দ ভাগাভাগি আর কলহের ইতিবৃত্ত। জীবন সায়াহ্নে এসে বৃদ্ধ মানুষগুলোর আকুতি।
লেখকের চোখে বাদ পড়েছি আধুনিকতার ছোঁয়া পাওয়া শহরের কথা। আমরা শহর বলতে অট্টালিকা বুঝি। কিন্তু কখনো রেললাইনের ধারে কিংবা শহরের অন্য জায়গার বস্তিগুলো দেখেছি? এখানে জীবনের মানে কি? একদিন কাজে না গেলে উপোষ থাকতে হয়। মেয়েরাও এখানে বাইরে কাজ করে, বাচ্চা মানুষ করে, গৃহস্থালির কাজ করে। যুবতী মেয়েরা সন্ধ্যার পর উগ্র সাজে শরীরের পসরা সাজায় ল্যাম্পপোস্টের হলুদ আলোয় কিংবা পার্কের অন্ধকার বেঞ্চিতে বসে। আর এদেরই খদ্দের হলো, দিনের বেলায় মুখোশ পরিহিত ভদ্রলোকেরা।
.
লেখকের কলমের আঁচড়ে শক্তি আছে। জীবনের নানা শ্রেণীর নানা ধাপের মানুষের অসহায় বোধগুলো তুলে ধরেছেন খোলা চোখের সামনে এবং তা অত্যন্ত নির্মোহ বিশ্লেষণে।
জীবনের মানে কখনো ক্ষুধা, কখনো অর্থ, কখনো প্রেম কিংবা প্রেমহীন অবদমিত কাম পিপাসা।
.
লেখককে একটা অনুরোধ করবো, ভিন্ন ভিন্ন গল্পে লেখক যেন ভিন্ন নাম ব্যবহার করেন। কিছু গল্পে একই নাম বারবার এসেছে। এটা ভালো লাগেনি।
বইয়ের পেইজ অনেক সুন্দর।
আর বানান ভুল নেই।
পড়ে স্বস্তি পেয়েছি।
লেখকের অন্য লেখার অপেক্ষায়।
#বইপ্রেম_অক্ষয়_হোক।😍
No comments